জলপরি ও কাথুরিয়ো: এক জাদুকরী বন্ধুত্বের গল্প
একসময়, অনেক দিন আগে, বঙ্গোপসাগরের গভীর নীল জলে বাস করত এক সুন্দরী জলপরি, তার নাম ছিল "নীলা"। তার চুল ছিল সাগরের ঢেউয়ের মতো দীর্ঘ, এবং চোখ দুটি জ্বলজ্বল করত মুক্তোর মতো। নীলা ছিল সমুদ্রের রানী, তবে তার হৃদয়ে বাস করত এক গভীর কৌতূহল—মানুষের জগৎ কেমন?
একদিন, সমুদ্রের তীরে বসে থাকা একটি ছেলেকে দেখল নীলা। তার নাম ছিল কাথুরিয়ো। সে ছিল একজন মৎস্যজীবীর ছেলে, যার স্বপ্ন ছিল সমুদ্রকে বোঝা এবং তার গহীনে লুকিয়ে থাকা রহস্য উদঘাটন করা।
প্রথম সাক্ষাৎ
নীলা এবং কাথুরিয়োর প্রথম সাক্ষাৎ হয় এক পূর্ণিমার রাতে। কাথুরিয়ো সমুদ্রের ধারে বসে বাঁশির সুর তুলছিল। সেই সুর নীলার মনকে আকর্ষণ করে। সে উঠে আসে জলের ওপর এবং প্রথমবারের মতো কথা বলে একজন মানুষের সঙ্গে।
জাদুকরী বন্ধুত্ব
নীলা আর কাথুরিয়োর বন্ধুত্ব ধীরে ধীরে গভীর হয়। নীলা সমুদ্রের অজানা গল্প শোনায়, আর কাথুরিয়ো তাকে জানায় মানুষের পৃথিবীর গল্প। তারা একসঙ্গে অনেক রাত্রি কাটায়, যেখানে কাথুরিয়ো নীলাকে শেখায় তার ভাষা, আর নীলা তাকে শোনায় সমুদ্রের গান।
একটি বিপদজনক যাত্রা
একদিন, সমুদ্রে এক ভয়ংকর ঝড় ওঠে। কাথুরিয়ো সমুদ্রে আটকে পড়ে। নীলা তাকে বাঁচানোর জন্য গভীর জলে ডুব দেয় এবং তাকে নিজের শক্তি দিয়ে রক্ষা করে। কিন্তু এর ফলে নীলা দুর্বল হয়ে পড়ে, কারণ তার জাদুর একটি বড় অংশ তাকে রক্ষা করতে ব্যয় হয়ে যায়।
পরিণতি
এই ঘটনার পরে, কাথুরিয়ো বুঝতে পারে, নীলাকে বাঁচাতে হলে তাকে সমুদ্র থেকে মুক্ত করতে হবে। কিন্তু তার জন্য প্রয়োজন ছিল একটি জাদুকরী মুক্তা, যা সমুদ্রের গভীরে লুকিয়ে ছিল। কাথুরিয়ো একটি বড় যাত্রায় বের হয় সেই মুক্তা আনার জন্য।
কথিত আছে, কাথুরিয়ো সফল হয়। কিন্তু সেই মুক্তা ব্যবহার করার ফলে নীলা হারিয়ে যায় মানুষের জগৎ থেকে, এবং ফিরে যায় সমুদ্রের গহীনে। তবু কাথুরিয়োর হৃদয়ে নীলা চিরকাল বেঁচে থাকে।
0 Comments